অস্বীকার করার কোনো প্রয়োজন নেই যে, গর্ভাবস্থা একটি জীবনকে পরিবর্তন করে দেয়। একটি নতুন জীবন নিয়ে আসা মোটেই সহজ কাজ নয়। এই যাত্রা একজন নারীর শরীরে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে যা মোকাবিলা করা অত্যন্ত কঠিন।
৩১ বছর বয়সী ভারতীয় নাগরিক সুমিত্রা শ্রীধরনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। গর্ভাবস্থার পর তার ওজন অনেক বেড়ে যায়। তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, তার স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হতে দেবেন না এবং ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেন। আত্মবিশ্বাস আর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে এক বছরে তিনি ২৫ কেজি ওজন কমিয়ে আগের চেহারায় ফিরেছেন।
৫ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা সুমিত্রা একটি কোম্পানিতে ফিনান্সিয়াল কনসালটেন্ট হিসেবে চাকরি করেন। ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাস করা সুমিত্রার ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯৫ কেজিতে। ওজন কমানোর এই যাত্রার কথা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। তার সেই কথাগুলো ঢাকাটাইমস পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
টার্নিং পয়েন্ট: আমার মেয়েকে জন্ম দেওয়ার পরে আমার প্রচুর ওজন বেড়ে গিয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি যে চাপ এবং ঘুমের অভাবের কারণেই ওজন বেড়েছিল। আমি মেয়ের প্রথম জন্মদিনে নিজের ছবি দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম। সেখানে আমি দেখেছিলাম আমার ওজন কত বেড়েছে।
তারপরই আমি বুঝতে পারি যে আমার অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য কিছু করা দরকার। এরপর আমি আমার ডায়েট এবং ব্যায়ামের রুটিন পরিবর্তন করি। আমি এমন সব বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলাম যা আমি দীর্ঘ সময় ধরে চালিয়ে যেতে পারবো। ঠিক তাই করেছি এবং ফলাফল এখন সবাই দেখছেন। আমি বলবো না যে এটি সহজ ছিল তবে চেষ্টায় তা সম্ভব হয়েছে।
খাবার:
সকালের নাস্তা: প্রোটিন শেক বা ইডলির মতো হালকা কিছু।
দুপুরের খাবার: শাকসবজি, দই এবং সালাদের একটি অংশসহ দুটি ভারী রুটি।
রাতের খাবার: আমি উপমা, রুটি বা পোহার সাথে বাটার মিল্ক বেছে নিই। রাতের প্রথম ভাগে অর্থ্যাৎ সন্ধ্যা সাতটার মধ্যেই রাতের খাবার গ্রহণ করি।
ব্যায়ামের আগের খাবার: এক কাপ গ্রিন টি
ব্যায়ামের পরের খাবার: লেবু ও মধুমিশ্রিত এক গ্লাস পানি।
আমার কোনো খাবার খেতে ইচ্ছা হলে তা ঘরে তৈরি করে খেয়েছি। নিয়মিতই ঘরে তৈরি খাবার খেয়েছি। এছাড়া আদা পানি ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
ব্যায়াম: আমি যখন ওজন কমানোর জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা করছিলাম তখন দৈনিক আধা ঘণ্টা কার্ডিও ব্যায়াম এবং ১৫ মিনিট শক্তির ব্যায়াম করতাম। এখন শরীরের ওজন বজায় রাখতে ২০ মিনিট কার্ডিও এবং ১০ মিনিট শক্তির ব্যায়াম করি।
সুমাত্রা বলেন, একেকজনের শরীর একেক রকম তাই আপনার ওজন কমানোর পরিকল্পনা আপনি নিজেই করুন এবং চেষ্টা শুরু করুন। একবার যদি দেখেন ওজন কিছুটা কমেছে তারপর মনের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করবে এবং চেষ্টা অব্যাহত রাখতে এটি উৎসাহ যোগাবে।
তিনি বলেন, মনযোগ ঠিক রাখতে আপনি কোনো একজনকে অনুকরণ করতে পারেন। যিনি আপনাকে এ বিষয়ে মনোবল যোগাতে পারে। এছাড়া স্বাস্থ্যগত বেশিরভাগ সমস্যাই ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাই এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত।